ফেনী সদর উপজেলার দক্ষিণ পূবাঞ্চলে মনোরম প্রাকৃতিক আবহে মোটবী ইউনিয়নের অবস্থান। এ ইউনিয়নের বুক চিরে বয়ে গেছে শামত্ম শীতল কালিদাস পাহালিয়া নদী। ইতিহসি ঐতিহ্যের দিক থেকে এ অঞ্চলের ব্যাপক সুনাম রয়েছে এবং ঐতিহ্যের সে ধারা এখনো অভ্যাহত রয়েছে। ভূ-প্রকৃতি ও ভৌগলিক অবস্থান, পীর-ফকিরের প্রভাব এবং পূর্বপুরুষের বীরত্ব গাঁথা এই ইউনিয়নের মানুষের ভাষা ও সংস্কৃতি গঠনে প্রভূত ভূমিকা রেখেছে । ফেনীর দক্ষিণ-পূর্ব অঞ্চলে অবস্থিত এ ইউনিয়নের উত্তরে পাঠাননগর, দক্ষিণে ছনুয়া, পূর্বে ঘোপাল ও পশিচমে কালিদহ ইউনিয়ন অবস্থিত । ফেনীর কথ্য ভাষায় মহাপ্রাণ ধ্বনিসমূহ উচ্চারণের ক্ষেত্রে বায়ুপ্রবাহের চাপ কম থাকায় মহাপ্রাণ ধ্বনিসমূহ অল্পপ্রাণ ধ্বনির মত উচ্চারিত হয় আবার অল্পপ্রাণ ধ্বনিসমূহ উচ্চারণের ক্ষেত্রে বায়ুপ্রবাহের চাপ বেশি থাকায় অল্পপ্রাণ ধ্বনিসমূহ মহাপ্রাণ ধ্বনির মত উচ্চারিত হয় । বর্ণ উচ্চারণে সহজতর বর্ণ ব্যবহার করা হয় অধিক হারে এবং প্রয়োজনে বর্ণকে ভেঙে কাছাকছি অবস্থান উচ্চারণ অবস্থান বেছে নেওয়া হয় অর্থাৎ ভাষা সহজীকরণের প্রবণতা সুস্পষ্ট। এর অন্যতম আরেকটি বৈশিষ্ট্য হচ্ছে বাংলাদেশের যে কোন অঞ্চলের মানুষ এ অঞ্চলের আঞ্চলিক ভাষাকে সহজভাবে বুঝতে পারে এবং সহজেই এ আঞ্চলিক ভাষাটিকে নিজের কন্ঠে ধারণ করতে পারে।ছোট ফেনী-কালিদাস-পাহালিয়া খালের খরস্রোত, নদীভাঙন, বন্যা এবং বঙ্গোপসাগরের নোনা হাওয়া মানুষের আচার-আচরণ, খাদ্যাভ্যাস, ভাষা, সংস্কৃতিতে ব্যাপক প্রভাব ফেলেছে বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করেন। এ অঞ্চলের মানুষগুলো ধর্মভীরু-সহজ-সরল-আতিথ্যপ্রবণ। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি এ অঞ্চলের মানুষের মজ্জাগত। আঞ্চলিক সংস্কৃতিতে মুখে মুখে ছড়াকাটা, ধাঁধাঁ, বচন ইত্যাদি প্রচলিত।
অসংখ্য জ্ঞানী-গুনি ও সাধকের জন্ম এখানে। বিখ্যাত নাট্য ব্যাক্তিত্ব প্রফেসর শামছুল হক, এডভোকেট সাহাব উদ্দিন, ড. ইনামুল হক, মহি উদ্দিন বাহর, আমির হোসেন বাবু ও আধ্যাত্বিক সাধক ফকির গরিবুলস্না শাহ ,সৈয়দ আমীর আলী শাহ এ পুণ্য ভূমিতে জন্মেছেন। মহান মুক্তিযুদ্ধে এ অঞ্চলের শতশত তরম্নণ, যুবক সর্বস্ব বিলিয়ে লাল সবুজের পতাকা অর্জনে যাপিয়ে পড়ে। কালপরিক্রমায় মোটবী ইউনিয়ন শিক্ষা, সংস্কৃতি, ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠান, খেলাধুলাসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে তার নিজস্ব স্বকীয়তা আজও সমুজ্জ্বল রেখে চলেছে।
পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নে: মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, এটুআই, বিসিসি, ডিওআইসিটি ও বেসিস